রবিবার ভোর ৫:৩৬, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলাম তরবা‌রির জো‌রে প্রতি‌ষ্ঠিত হয়‌নি: আলেমদের সঙ্গে মোকতা‌দির চৌধুরী

সমাজ উন্নয়ন ও পুনর্গঠ‌নে মস‌জি‌দের ভূ‌মিকা-২য় পর্ব

২১০ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

মসজিদ হ‌লো মুস‌লিম সমা‌জের মূলকেন্দ্র ও পৃ‌থিবীর সর্ব‌শ্রেষ্ঠ স্থান। এ কার‌ণে রাসুল(সা.) ৬২২ খ্রিস্ট‌া‌ব্দে ম‌দিনায় হিজর‌তের সময় যাত্রা‌বির‌তিকা‌লে তি‌নি ‘কুবা’ নামক স্থা‌নে ইসলা‌মের প্রথম মস‌জিদ নিমার্ণ ক‌রেন। প‌রে ম‌দিনায় পৌঁ‌ছে জ‌মি ক্রয় ক‌রে কাদামা‌টির  দেওয়াল বা‌নি‌য়ে ও খেজুর গা‌ছের ডাল-পাতা দি‌য়ে ছাদ বা‌নি‌য়ে মস‌জিদ-ই-নববী তৈ‌রি ক‌রেন। আর এই মসজিদ থে‌কেই মহানবী(সা.)সহ চার খ‌লিফা মুস‌লিমজাহান প‌রিচালানা ক‌রে‌ছি‌লেন।

সুতরাং আমা‌দের‌কেও মস‌জিদ নিমা‌র্ণের সময়  মহনবী(সা.)-এর  মহৎকার্য  স্মরণ করে সাদা‌সি‌ধে এবং চাক‌চিক‌্যমুক্ত মস‌জিদ তৈ‌রি করতে হ‌বে। এতে অ‌ধিক নক্সা, অ‌ধিক কারকার্য ও রঙচ‌ঙে করা বিধেয় নয়। এটা এক ধর‌নের অপব‌্যয় ও অপচয়। এই প্রস‌ঙ্গে রাসুল(সা.) ব‌লে‌ছেন,”‌কিয়ামত ততক্ষন আস‌বে না, যতক্ষন মানুষ মস‌জি‌দের সৌন্দর্য নি‌য়ে গর্ব কর‌বে এবং বড়-বড় মস‌জিদ নিমার্ণ করার প্রতি‌যো‌গিতা কর‌বে। মস‌জিদগু‌লো চাক‌চিক‌্য ও জাঁকজমকপূর্ণ হ‌বে কিন্তু সেখা‌নে আল্লাহর জি‌কির থাক‌বে না।” ( আবু দাউদ-৪৪৯, ইব‌নে মাজাহ-৭৩৯)।  সুতরাং রঙচ‌ঙের ম‌সজিদ করা ইসলা‌মে সস্পূর্ণ নি‌ষেধ। এই প্রস‌ঙ্গে মহানবী(সা.) আরো ব‌লে‌ছেন,” আমি মস‌জিদসমূহ‌কে রঙচ‌ঙে  কর‌তে আদিষ্ট হইনি। তারপরও তোমরা  মস‌জিদসমূহ‌কে সৌন্দর্য-খ‌চিত কর‌বে, যেমন ইহু‌দি ও খ্রিস্টানরা তা‌দের গির্জাগু‌লো‌কে ক‌রে‌ছে। অথচ তা‌দের অনুকরণ অ‌বৈধ।”( আবু দাউদ :৪৪৮)।  হালআম‌লে  আমা‌দের দে‌শে দেখা যায়, প্রায় সব মস‌জিদই চাক‌চিক‌্যময় ও জাঁকজমকপূর্ণ! এসব মসজি‌দে  বৈদ‌্যু‌তিক পাখা থাকার পরও এসি যন্ত্র  ব‌্যবহৃত হ‌চ্ছে!  এছাড়াও দেখা যায়, এক‌টি মস‌জি‌দে একা‌ধিক‌ দেওয়াল ঘ‌ড়ি থা‌কে! এটা এক ধর‌নের অপচয়, বরং এই টাকা দি‌য়ে ইসলা‌মের প্রচার-প্রসার ও সামা‌জিক উন্নয়নমূলক কা‌জে ব‌্যয় করা যে‌তে পা‌রে।

ইদা‌নিং আমা‌দের দে‌শের অ‌নেক এলাকায় দেখা যায়, অন‌্য কো‌নো মস‌জি‌দের স‌ঙ্গে পাল্লা দি‌য়ে নিম‌ার্ণ  করা হ‌চ্ছে দৃ‌ষ্টিনন্দন  কারুকার্যখ‌চিত মস‌জিদ। এক ধর‌নের প্রতি‌যো‌গিতার মাধ‌্যমে উদ্যোগ  গ্রহণ ক‌রে এসব মস‌জিদ বানা‌নো হ‌চ্ছে।  যেখা‌নে মস‌জি‌দের প্রয়োজন সেখা‌নে মস‌জিদ নিমার্ণ ঠিক আছে।  কিন্তু দেখা যায়, রাস্তার এপা‌রে মসজিদ, ওপা‌রে আরেক মস‌জিদ!  নি‌জে‌দের বাহাদুুরি জা‌হি‌রের জন‌্য এমন‌টি হ‌চ্ছে। মূলত বংশীয় বিবাদ‌কে কেন্দ্র ক‌রে বা মস‌জিদ ক‌মি‌টিতে কে থাক‌বে তা নি‌য়ে ঝগড়া ক‌রে নতুন মস‌জিদ তৈ‌রি হ‌চ্ছে। ইসলা‌মি শ‌রিয়‌তে এভা‌বে মস‌জিদ নিমার্ণ করা নিন্দনীয় কাজ। বস্তুত,  মস‌জিদ অত‌্যা‌ধিক চাক‌চিক‌্য করা  বা নি‌জে‌দের বংশীয় মর্যাদা রক্ষার ল‌ক্ষ্যে মস‌জিদ তৈ‌রি করা মুসলমান‌দের অধঃপত‌নের  আলামত। আগেকার দি‌নে মস‌জিদগু‌লো ছিল জীর্ণশীর্ণ, ত‌বে মানু‌ষের ঈমান ছিল পাকা‌পোক্ত।  বলব‌ার অ‌পেক্ষা রাখেন না যে, শহর-গ্রা‌ম  সর্বত্র এখন যেই হা‌রে চাক‌চিক‌্য ও জাঁকজমকপূর্ণ নতুন নতুন মস‌জিদ হ‌চ্ছে, সেই হারে মুস‌ল্লির সংখ‌্যা বাড়‌ছে না। এসব নি‌য়ে গভীরভা‌বে চিন্তা করার সময় এখন এসে‌ছে। মস‌জিদ   ক‌মি‌টির উচিত এব‌্যাপা‌রে গঠনমূলক ভূ‌মিকা রাখা।
আমা‌দের দে‌শের  শিশু‌দের‌কে  ভা‌লো কা‌জের প্রতি  উৎসা‌হিত কর‌তে এবং মন্দ ও নিন্দনীয় কাজ থে‌কে বিরত রাখার  ল‌ক্ষ্যে বি‌শেষ দিনগু‌লো‌তে  মস‌জি‌দের উদ্যো‌গে শিশু‌দের নি‌য়ে ইসল‌মের প্রাথ‌মিক‌ বিষয়গু‌লোর  ওপর এবং কোরআন  তিলাওয়াত-নাত-হাম ও ইসলামী গজ‌লের  প্রতি‌যো‌গিতা ও পুরস্কা‌রের ব‌্যবস্থা করা যে‌তে পা‌রে। এর ফ‌লে শিশ‌ুর মন আমূল প‌রিবর্তন হ‌বে। আস্তে আস্তে তা‌দের মা‌ঝে  ভা‌লো ও সৃজনশীল কা‌জের  প্রতি আগ্রহ সৃ‌ষ্টি হ‌বে এবং  মন্দ কাজ‌কে সব সময় প‌রিহার কর‌বে। এছাড়াও শিশুদের শারী‌রিক ও  মান‌সিক বিকা‌শের জন‌্য মস‌জিদ প্রাঙ্গ‌নে খেলাধুলার ব‌্যবস্থা করা যে‌তে পা‌রে, এতে ক‌রে আজা‌নের সময় শিশুরা সহ‌জে মস‌জি‌দে যে‌তে পারবে  এবং ক্রামান্ব‌য়ে তা‌দের মা‌ঝে মসজি‌দের প্রতি মহাব্বত সৃ‌ষ্টি হ‌বে।
উল্লেখ, বর্তমা‌নে মা‌ঝেম‌ধ্যে লক্ষ‌্য করা যায় কো‌নো শিশু মস‌জি‌দের সাম‌নের কাতা‌রে বস‌লে তা‌কে সাম‌নে থে‌কে সরে গিয়ে পেছ‌নের কাতারে বস‌তে   বাধ‌্য করা হয়! মসজি‌দে  এধর‌নে নে‌তিবাচক আচরণ  প‌রিহার করা সবারই কা‌ম‌্য। কারণ, এতে নামা‌জের প্রতি শিশু‌দের  অনাগ্রহ সৃ‌ষ্টি হ‌বে। নবা‌লেগ শিশু‌দের ব‌্যাপা‌রে বিধান হ‌লো, য‌দি শিশু একজন হয়, তাহ‌লে তা‌কে বড়‌দের  কাতা‌রেই দাঁড়  করা‌নো  উচিত। এ ক্ষে‌ত্রে বড়‌দের নামা‌জের কো‌নো অসু‌বিধা হ‌বে না।
ত‌বে হা‌রি‌য়ে  যাওয়ার বা দুষ্ট‌মি করার আশঙ্কা হ‌লে শিশুরা বড়‌দের কাতা‌রে দাঁড়া‌তে পার‌বে।  বড়‌দের কাতারে দাড়‌নোর কার‌ণে  ক‌ঠোর ভাষায় শিশু‌দের পেছ‌নে পা‌ঠি‌য়ে দেওয়া সম্পূর্ণরূ‌পে  হা‌দি‌সের প‌রিপ‌ন্থি কাজ।(আলবাহরুর বা‌য়েক:১/৬২৮, আদ্দুররুল মুখতার:১/৫৭১)। সুতরাং মস‌জি‌দে নাবা‌লেগ শিশু‌রা বড়‌দের কাতা‌রের ম‌ধ্যে দা‌ড়িয় নামাজ আদ‌ায় কর‌লে পেছ‌নের মুসল্লিদের নামাজ হয় ন‌া বা নামাজ ক্রটিযুক্ত হয় এটা স‌ঠিক নয়। মস‌জিদ ক‌মি‌টি‌কে এইদি‌কে য‌থেষ্ট খেয়াল রাখ‌তে হ‌বে। কারণ ছোটরা য‌দি মস‌জিদ বিমুখ হয়, তা‌হেল ভ‌বিষ‌্যতে মস‌জিদ  আবা‌দের পথ  বন্ধ হ‌য়ে যা‌বে।  এই নে‌তিবাচক আচরণ মস‌জিদগু‌লো‌কে আবা‌দের প‌রিব‌র্তে প্রাণহীন ক‌রে তুল‌বে!!
আজ‌কের শিশুরা আগামী দিনের কর্ণধার। শৈশবকা‌লে শিশুরা থা‌কে কাদামা‌টির ম‌তো নরম,তা‌কে যেমন ইচ্ছা সেভা‌বে গড়া যায়। এটা  শিশুর চ‌রিত্র গঠ‌নের উপযুক্ত সময় আর এ সময় তার  চ‌রিত্র গঠ‌নের জন‌্য মা-বাবার পাশাপা‌শি মস‌জি‌দের মক্তবগু‌লোও গুরুত্বপূর্ণ ভূ‌মিকা রাখ‌তে পা‌রে। কিন্তু আমা‌দের দে‌শের মক্তবগু‌লোতে হালআম‌লে শিশু‌দের‌কে শুধু   ‌কোরআন শিক্ষাই দেওয়া হ‌য়ে থা‌কে, অন‌্য কিছু নয় !! ত‌বে এই গতানুগ‌তিক কার্যক্রমের  আমূল  প‌রিবর্তন আনা অবশ‌্যক।
এখন থে‌কে শিশু‌দের চ‌রিত্র গঠ‌নের ল‌ক্ষ্যে   মস‌জি‌দের মক্তবগু‌লো‌তে  শুদ্ধভা‌বে কোরআন শিক্ষার পাশাপা‌শি ধর্মীয় বি‌ভিন্ন আদব-কায়দাসহ বি‌ভিন্ন নবী-রাসূল ও সাহাবী‌দের জীবন কা‌হিনী গল্প ও ক‌বিতার আকা‌রে শিশু‌দের নিকট উপস্থাপন করা যে‌তে পারে। এর ফ‌লে  তা‌দের ম‌ধ্যে  দেশ‌প্রেম ও ম‌ানব‌সেব‌ার মন-মান‌সিকতা তৈ‌রি হ‌বে। এভা‌বে শিশুরা  সৎ-সাহসী  ও ইনসাফকারী  হি‌সে‌বে গ‌ড়ে ও‌ঠে ভ‌বিষ‌্যতে জা‌তি গঠনে অ‌বিস্মরণীয় ভূ‌মিকা রাখ‌তে  পার‌বে।
ধর্ম‌কে ‌ গভীরভা‌বে জানা ও বু্ঝার জন‌্য বা‌র্ষিক ওয়াজ মাহ‌ফি‌লের পাশাপা‌শি মস‌জি‌দে  সী‌মিত প‌রিস‌রে মাসিক ওয়াজা মাহ‌ফি‌লের আয়োজন করা যে‌তে পা‌রে।ত‌বে গতানুগ‌তিক ওয়া‌জের প‌রিবর্তে কোরআন-হা‌দি‌সের আলো‌কে বি‌শ্লেষণধর্মী, উদ্দীপনামূলক ও গ‌বেষণাধর্মী  ওয়াজ কর‌তে হ‌বে। ধর্মীয় বিষ‌য়ের পাশাপা‌শি সমকালীন বিশ্ব, হাল আম‌লের বাংলা‌দেশ ও সমা‌জের বি‌ভিন্ন  সমস‌্যা ও এর সমাধান নিয়ে ওয়াজ কর‌তে হ‌বে। ইসলাম ধ‌র্মে উদ্ধুদ্ধ করার জন‌্য এই অনুষ্ঠা‌নে অমুস‌লিম‌দের‌কেও আমন্ত্রণ  করা যে‌তে পা‌রে।
এছাড়াও প্রতি দশ দিন পর পর  বাদআছর থে‌কে বাদএশা পর্যন্ত মস‌জি‌দে  কোরআন-হা‌দিস ও ইজমা-‌কিয়া‌সের আলো‌কে আমা‌দের সমা‌জের বি‌ভিন্ন সমস‌্যা, বর্তমান মুস‌লিম বিশ্ব  ও  প‌শ্চিমা‌দের শোষন-‌নির্যাতন,  ধর্ম-দর্শন ইত‌্যা‌দি বিষয় নি‌য়ে সওয়াল-জবাবের অনুষ্ঠান করা যে‌তে পা‌রে। এতে মানু‌ষের মন থে‌কে ধর্মীয় অ‌নেক ভ্রান্ত ধারনা দূর  হ‌বে এবং ধর্ম  পাল‌নে বেশ উৎসা‌হিত হ‌বে। এমন‌কি এই  অনুষ্ঠা‌নের  ব‌দৌল‌তে কো‌নো অমুস‌লিমও ধর্মান্তরিত হ‌য়ে ইসলাম  কবুল কর‌তে পা‌রে! এধর‌নের অনুষ্ঠান প্রতি‌টি মস‌জি‌দে চলম‌ান রাখা অত‌্যান্ত জরু‌রি।
বর্ণ, গোত্র, পেশা, ভাষা ও অঞ্চ‌লের ভিন্নতা স‌ত্ত্বেও ঈমান ও ইসলামী আদ‌র্শের ভি‌ত্তি‌তে সব মুসলমান এক জা‌তি হি‌সে‌বে প‌রিগ‌নিত। সব মুসলমান সাক্ষ‌্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কো‌নো মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ(সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সবাই এক কিবলার দি‌কে ফি‌রে নামাজ আদায় ক‌রে, একই মা‌সের রোজা পালন ক‌রে এবং একই স্থা‌নে  ও একই সম‌য়ে হজ সম্পাদন ক‌রে। তারপরও বাংলা‌দেশসহ বিশ্বব‌্যাপী  মুসলমানরা শিয়া-সুন্নী, ওয়াহবী-‌রেজবী, কা‌দিয়ানী-সুন্নী, আশা‌রিয়া-জাব‌রিয়া,মুর‌জিয়া-জাহ‌মিয়‌্যাহ, আহ‌লে হাদীছ-মুওদূদী, বাহায়ী-পার‌ভেজী, কাদ‌রিয়া-মু’তা‌জিলাসহ আরো অ‌নেক দল ও সম্প্রদা‌য়ে বিভক্ত। তারা সবাই পরস্প‌রের স‌ঙ্গে কল‌হে লিপ্ত। তারা কেউ কাউকে পছন্দ  ক‌রেন না এবং সহ‌্য    কর‌তে  পা‌রেন না। তারা পরস্প‌রের প্রতি পরম অ‌সহিষ্ণু ও হিংসাত্মক। সব সময়  একদল অপর দ‌লের সমা‌লোচনা ক‌রে বেড়ায়। কেউ কাউকে বিশ্বাস ক‌রে না।
অথচ, প‌বিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ব‌লে‌ছেন, ” তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভা‌বে আঁক‌ড়ে ধ‌রো এবং পরস্পর বি‌চ্ছিন্ন হ‌য়ো না।” (সুরা আলে ইমরান : ১০৩)। মূলত অনৈক‌্য, আস্থাহীনতা ও প্রতি‌হিংসার কার‌ণে মুসলমানরা আজ রাজ‌্য হারা ও নির্যা‌তিত হ‌চ্ছে। অথচ মুসলমানরা  ৬৩০ থে‌কে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ পযর্ন্ত    প্রায়  ১৩০০ ব‌ছর বিশ্বব‌্যাপী রাজত্ব ক‌রে‌ছিল। মধ‌্যযু‌গে জ্ঞান-‌বিজ্ঞা‌নে  মুস‌লিম‌দের সমকক্ষ অন‌্য কো‌নো জা‌তি ছিল না।  আত্মকল‌হ, আস্থাহীনতা, মত‌ভে‌দ, বিশ্বাসভঙ্গ, জ্ঞানার্জ‌নে অ‌নিহা ও অ‌তি‌রিক্ত ভোগ-‌বিলাসীকতার কারণে বিশাল মুস‌লিম সাম্রা‌জ্যের পতন ঘ‌টে। আর পত‌নের স‌ঙ্গে স‌ঙ্গে ইতিহাস থে‌কে হা‌রি‌য়ে বা মু‌ছে যায় মুস‌লিম চিন্তা‌বিদ, বিজ্ঞানী, ধর্মতা‌ত্ত্বিক থে‌কে শুরু ক‌রে শাসক, রাষ্ট্রনায়ক ও যোদ্ধা‌দের অবদা‌নের কথা। সেই বী‌রের জা‌তি মুস‌লিমরা আজ দমন-পীড়‌নের শিক‌ার।  সুতরাং এই ভয়াবহ অবস্থার প্রেক্ষি‌তে সব মুসলিম  দল‌ ও সম্প্রদায়‌কে কোরআন-হা‌দি‌সের আলো‌কে   একই ছাতার নি‌চে আনার জন‌্য প্রতি‌টি  জা‌মে মস‌জি‌দের স‌ম্মি‌লিত উদ্যো‌গে  প্রতি‌টি  উপ‌জেলায় এক‌টি নি‌দির্ষ্ট জায়গায় প্রতি মা‌সে  সব দল ও সম্প্রদায়‌কে নি‌য়ে এক‌টি  বি‌শেষ আলোচনা সভার ব‌্যবস্থা করা যে‌তে পা‌রে। এতে বি‌ভিন্ন দল ও সম্প্রদা‌য়ের ম‌ধ্যেকার  বিভ‌ক্তি  ও মত‌ভেদ  আস্তে আস্তে দূর হবে। এক পর্যা‌য়ে  সব  দল ও সম্প্রদ‌ায় একই ছাতার নী‌চে  এক‌ত্রিত হ‌বে ইনশাআল্লাহ। এই প্রক্রিয়া চলমান রাখা প্রতি‌টি  মস‌জি‌দের এক‌টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ঐক্যের এই প্রক্রিয়া পৃ‌থিবীর সব মুসলিম দে‌শেই চলমান রাখা উচিত। (চল‌বে)।
খায়রুল আকরাম খান
‌ব‌্যু‌রো চীফ : deshdorshon.com

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

সন্ত্রাসী ও হত্যা মামলার আসামী…

১৬ বছরের অপকর্ম ধামাচাপা দিতেই…

সেনাবাহিনী নিয়ে কিছু জরুরি কথা