মঙ্গলবার রাত ১২:৫৪, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলাম তরবা‌রির জো‌রে প্রতি‌ষ্ঠিত হয়‌নি: আলেমদের সঙ্গে মোকতা‌দির চৌধুরী

রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার অপতৎপরতা: বিপ্লবী ছাত্রদের পথভ্রষ্ট করার ষড়যন্ত্র

১৬৫ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

খবর বের হয়েছে যে, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের বাইরে গিয়ে নতুন দল গঠনের চিন্তাভাবনা করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মূলত দেশের সব জায়গায় সংস্কার আনতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক মাসের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

ছাত্র আন্দোলনে জড়িত একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে এমনটাই জানিয়েছে নিউজ এজেন্সী রয়টার্স। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ ১৫ বছরে ১৭ কোটি মানুষকে লোহার খাঁচার মধ্যে রেখে শক্ত হাতে দমন-পীড়ন করেছেন শেখ হাসিনা। এমন পুনরাবৃত্তি চান না আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সূত্র: প্রিয়ডট কম, ১৬ আগস্ট ২০২৪।

ছাত্র নেতাদের কথায় অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে। রাজনীতির পরিবর্তনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরিবর্তন আনা জরুরি। বিশেষ করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোতে টাকা দিয়ে নেতা হবার প্রবণতা ব্যাপক। চেনা নেই-জানা নেই, রাজনীতির র বুঝে না এমন অনেকে টাকার জোরে দলের নেতা হয়ে বসে থাকে। অনেকে আবার হুট করে বিদেশ থেকে এসে দলের নেতা হয়। দুর্যোগ বা বিপদ এলে এরা আবার কেটে পড়ে। ৩৯ বছর যাবৎ গভীর ভাবে রাজনীতি পর্যবেক্ষণ এবং ২৮ বছরের মাঠ পর্যায়ে সাংবাদিকতা করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি টাকা দিয়ে নেতা হবার প্রবণতা এখনো শক্তিশালী অবস্থায় বিদ্যমান আছে। দেশ ও জাতির উন্নয়ন-অগ্রগতির স্বার্থে এ ধরণের অনাচারের অবশ্যই পরিবর্তন হওয়া দরকার।

সে ক্ষেত্রে তরুণ বিপ্লবী ছাত্র সমাজের ভূমিকা রাখা উচিত। কিন্তু তারা নিজেরা সরাসরি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া চরম আত্মঘাতি। ভুলে গেলে চলবে না যে, গত জুলাই মাসের গণবিপ্লবে নেতৃত্বের আসনে ছিলো ছাত্রসমাজ। তবে গণআন্দোলনে ফ্যাসিবাদের বেআইনী সুবিধাভোগী ও অন্ধ সমর্থক ছাড়া প্রত্যেক রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছে। কেউ সরাসরি, কেউ লেখালেখি, প্রচার-প্রচারণায় সহযোগিতা করে। আবার অনেকে গণআন্দোলন কামিয়াব হবার জন্য মহান আল্লাহ সুবহানাওয়া তা’আলার দরবারে ফরিয়াদ করেছেন। সর্বস্তরের মানুষের প্রচেষ্টা ছাড়া এতো বড় একটা গণবিপ্লব কামিয়াব হয়েছে-এটা আহম্মক ছাড়া কেউ বিশ্বাস করবে না। সুতরাং এ নিয়ে বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই।

স্বীকার করতেই হবে যে, দেশের রাজনীতি পরিচ্ছন্ন নয়। ছাত্র সমাজের কাজ হবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রেশার ক্রিয়েট করা।

ছাত্র সমাজকে লক্ষ্যচ্যূত করার ষড়যন্ত্র:
সবচেয়ে বড় কথা হলো ধ্বংসস্তুপের মধ্যে একটি অন্তবর্তি সরকার ক্ষমতা নিয়েছে। সরকারের অভ্যন্তরে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। ভুলে গেলে চলবে না যে, ফ্যাসিবাদের সমর্থক অনেক মিডিয়াগ্রুপ এখনো বহাল ও সক্রিয় আছে। ব্যাকডেটেড অনেক তত্ত্ব সামনে এনে তাদের কায়েমী স্বার্থ হাসিলের জন্য বিপ্লবী ছাত্র সমাজের মধ্যে বিভেদ তৈরী করে তাদের বিভ্রান্ত ও বিপদগামী করার অপচেষ্টা চালাতে থাকবে। ইতিমধ্যে সেটা তারা পুরোদমে শুরু করে দিয়েছে। বিভ্রান্ত হয়ে শক্তি ক্ষয় করা যাবে না। জুলাই মাসের শুরু থেকে ছাত্র জনতার যে বিপ্লব শুরু হয়েছে সেটা জারি রাখতে হবে।

বিতর্কিত মিডিয়া গোষ্ঠীর অপতৎপরতা:
একটি মিডিয়া গ্রুপ প্রথম আলো-ডেইলি স্টার ২০০৭ সালের মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারকে তাদের ইচ্ছেমত ডিকটেট করেছে। সরকারের ওপর চেপে বসে তাদের অশুভ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। বিগত ১৬ বছর যাবৎ রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন-পীড়ন, গুম, অপহরণ সকল সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। যেসব সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষক ফ্যাসিবাদের সমালোচনা করেছেন তাদের ডাকাতের মতো আটক করে সাজানো মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখা হয়েছিলো। এসব দুষ্কর্মের বিষয়ে আলোচিত মিডিয়াগুলো একেবারেই নিরব ছিলো। সোজা ভাষায় বলতে গেলে এসব মিডিয়া ফ্যাসিবাদের অন্যতম সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছে। যতই অপচেষ্টা করুক এসব মিডিয়া নিজেদের কুৎসিত চেহারা ঢাকতে পারবে না। ফ্যাসিবাদের দোসর ও সহযোগীদের অপতৎপরতা ও ষড়যন্ত্রের বিষয়ে ছাত্র সমাজকে সজাগ থাকতে হবে।

অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়ে গেছে:
বিপ্লব পরবর্তি এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনো বাকি রয়ে গেছে। গণআন্দোলনের ক্ষত এখনো শুকায়নি। এ আন্দোলনে কত মানুষ শহীদ হয়েছে-কত মানুষ জখম হয়েছে তার সঠিক হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন জায়গা ও হাসপাতালগুলোতে এখনো বেওয়ারিশ লাশ পাওয়ার খবর আসছে। তার মানে লাশের সারি শুধু দীর্ঘ হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অবশ্যই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা দরকার। তদন্ত কমিটি সঠিক তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপুরণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। সারাদেশে শহীদ, জখম, নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ কাজে কোনোরকম বিলম্ব করা যাবে না।

নির্যাতিত সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের ক্ষতিপুরণ:
ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যাক্ট ২০১৪, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮ ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০২৩ জারির বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এসব আইন করার সময় দেশের বিন্দুমাত্র স্বার্থের কথা চিন্তা করা হয়নি। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করে বাংলাদেশকে হাসিনার পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করার অশুভ চিন্তা থেকেই এসব গণবিরোধী আইন করা হয়েছিলো। বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি সরকার দলীয় লোকদের নানারকম অপকর্মের ব্যাপারে কিছু লিখলেই কোনো মামলা ছাড়াই সাংবাদিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের চোর-ডাকাতের মতো আটক করা হতো। আটক করার পর বেআইনী ভাবে ২ থেকে ৩ দিন পুলিশ কাস্টডিতে আটকে রাখা হতো। আইনে কোনো ব্যক্তিকে আটক করার পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিধান থাকলেও আইনের ছিটেফোটাও মানা হতো না। সবকিছু হতো এক ব্যক্তির ইচ্ছে ও মর্জি মতো। আমি নিজেও আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের নির্মম নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছি। এসব অসভ্য ও কালো আইনে যেসব সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় ভাবে একটি কমিটি গঠন করা দরকার। ছাত্র সমাজকে এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

ছায়া সরকার:
ছাত্র সমাজকে অবশ্যই অন্তবর্তি সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য ছায়া সরকারের ভূমিকা পালন করতে হবে। আগেই বলেছি যে, ২০০৭ এর মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর কাঁধে বন্দুক রেখে নিজেদের অশুভ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে আলোচিত মিডিয়া গোষ্ঠী। এবারও তারা পুরোপুরি সেনাবাহিনী ও অন্তবর্তি সরকারকে নিয়ন্ত্রণের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাদের যে কোনো অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়াই হবে ছাত্র সমাজের দায়িত্ব। ছাত্র সমাজের এখনো প্রচুর জরুরি কাজ বাকি আছে। সেগুলো দ্রুত সময়ে করতে হবে।

দেশপ্রেমিক মেধাবীদের নিয়ে ভাবতে হবে:
ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সৎ, পরীক্ষিত ও খাঁটি দেশপ্রেমিক মেধাবী সাংবাদিক, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীরা দেশ-বিদেশে অনেক সংগ্রাম করেছেন। দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তারা নিরলস ভাবে কাজ করেছেন। এসব নির্যাতিত সাংবাদিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে অন্তত ২ জনকে উপদেষ্টা করার জন্য সচেতন মহল থেকে দাবি ওঠেছে। এ দাবিকে অন্যায্য ও অযৌক্তিক বলার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়টি ছাত্র সমাজের মাথায় রাখা উচিত। শুধু টক-শো ও এসিরুমের উপদেষ্টা দিয়ে সঠিক ভাবে দেশ পরিচালনা করা কঠিন। মাঠ পর্যায়ে অভিজ্ঞ দীর্ঘদিন যাবৎ ফ্যাসিবাদী শাসনে নির্যাতিত-নিপীড়িত সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও লেখকদের কথা ভুলে গেলে দেশ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

সন্ত্রাসী ও হত্যা মামলার আসামী…

১৬ বছরের অপকর্ম ধামাচাপা দিতেই…

সেনাবাহিনী নিয়ে কিছু জরুরি কথা