রবিবার রাত ১১:৩৮, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলাম তরবা‌রির জো‌রে প্রতি‌ষ্ঠিত হয়‌নি: আলেমদের সঙ্গে মোকতা‌দির চৌধুরী

গরী‌রেব বন্ধু দেশ‌প্রেমিক এক কর্মবী‌রের মহাপ্রয়াণ (২য় পর্ব)

৫০৬ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

১৯৭১ সা‌লের ১৬ ডি‌সেম্বর বাংলাদেশ  শত্রুমুক্ত হওয়ার পর ডা.জাফরুল্লাহ তাঁর অসমাপ্ত এফআর‌সিএস কোর্স পূর্ণ করার জন‌্য লন্ড‌নের জীব‌নে  আর ফি‌রে যান‌নি। সে সম‌য়ের প্রেক্ষাপ‌টে মধ‌্যবিত্ত প‌রিবা‌রের একজন সদস‌্য হি‌সে‌বে এই সিদ্ধান্ত ছিল যুগান্তকারী ও বিপ্লবী।  শহ‌রের তরুণ‌দের ম‌ধ্যে যখন একটু একটু ক‌রে হতাশা আস‌ছে, তখন তি‌নি নতুন বাংলা‌দে‌শের স্ব‌প্নে বি‌ভোর। যুদ্ধকালীন সম‌য়ে প্রতিষ্ঠিত তাঁর ফিল্ড হাসপাতাল‌কে জনগ‌ণের হাসপাতা‌লে রূপ দেওয়ার চিন্তা ক‌রেন। সুতরাং সাধারণ মানুষের চি‌কিৎসার সু‌বিধা‌র্থে  ঢাকার অদূ‌রে সাভা‌রের ধামরাই এলাকায় এক‌টি হাসপাতাল গ‌ড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। এই সময় জোহরা বেগম, আব্দুর রব ও লুৎফর রহমান না‌মে তাঁর অ‌তি ঘ‌নিষ্ঠরা ৫ একর জায়গা দান ক‌রেন হাসপাতালের জন‌্য আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবুর রহমান আরও ২৩ একর জ‌মি অ‌ধিগ্রহন ক‌রে দেন। ১৯৭২ সা‌লের শে‌ষের দি‌কে মু‌ক্তিযু‌দ্ধের প্রতিষ্ঠান `বাংলা‌দেশ ফিল্ড হাসপাতাল` প‌রিব‌র্তিত হ‌য়ে `গণস্বাস্থ‌্য কেন্দ্র` না‌মে যাত্রা  শুরু ক‌রে।

গরীব রোগী‌দের স্বাস্থ‌্যসেবা সু‌নি‌শ্চিত করার জন‌্য ডা. জাফরুল্লাহ এই সময় স্থানীয় বেকার যুবক-যুবতী‌দের প্রশিক্ষণ দি‌য়ে গঠন ক‌রেন প্রাথ‌মিক স্বাস্থ‌্য প‌রিচর্যার কর্মী বা‌হিনী। চি‌কিৎসা বিজ্ঞা‌নে এ‌দের‌কে প‌্যারা‌মে‌ডিকস বলা হয়। তি‌নিই বাংলা‌দে‌শে  এধর‌নের সেবা প্রথম  শুরু ক‌রেন।  এই দলের সদস‌্যরা বাড়ি বা‌ড়ি গি‌য়ে রোগী‌দের সেবা-শ্রশ্রুরা কর‌তো এবং সাধারণ মানুষ‌কে স্বাস্থ‌্য ও জন্ম‌নিয়ন্ত্রণ প্রস‌ঙ্গে বি‌ভিন্ন উপ‌দেশ প্রদান কর‌তো আর জ‌টিল রোগী‌দের‌কে স্থানীয় সরকারি হাসপাতা বা গণস্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রে রেফার কর‌তো। নার্স ও চি‌কিৎসক‌দের চে‌য়ে তা‌দের অবদানও অনস্বীকার্য। এই কর্মী বা‌হিরীর আ‌রেক‌টি কাজ ছিল প্রতি‌টি রোগীর জন‌্য স্বাস্থ‌্যবিমা করা। এই স্বাস্থ‌্যবিমার প্রিমিয়াম নির্ধা‌রিত হ‌তো আ‌র্থিক অবস্থার ওপর ভি‌ত্তি ক‌রে। এই স্বাস্থ‌্যবিমা গণস্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রে এখ‌নো অব‌্যাহত আ‌ছে। বাংলা‌দে‌শে গণস্বাস্থ‌্য কেন্দ্রই প্রথম প্রতিষ্ঠান, যারা এ দে‌শে স্বাস্থ‌্যবিমা চালু ক‌রে।  বাংলা‌দেশ  সরকা‌রের প্রথম পঞ্চবা‌র্ষিক প‌রিকল্পনায় স্বাস্থ‌্য অধ‌্যা‌য়ে স্বাস্থ‌্যবিমার উ‌ল্লেখ আ‌ছে, কিন্তু সে‌টি আজও বাস্তবা‌য়িত হয়‌নি। ত‌বে ডা.জাফরুল্লাহ সেটা ক‌রে দেখি‌য়ে‌ছেন। ইচ্ছা কর‌লে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বড় বড় ডিগ্রী অর্জন ক‌রে রোগী দে‌খে প্রচুর টাকা রোজগার কর‌তে পার‌তেন। এমন‌কি চি‌কিৎসা খা‌তের প্রধান ব‌্যবসায়ী হ‌তে পার‌তেন, কিন্তু ডা. জাফরুল্লাহ ছি‌লেন ভিন্ন ধাতুর গড়া এক লড়াকু  মানুষ। গণমানু‌ষের স্বাস্থ‌্য খা‌তের উন্নয়‌নে নি‌জে‌কে নি‌য়ো‌জিত ক‌রে‌ছেন। ১৯৭৫ সা‌লের দি‌কে বি‌শ্বের অন‌্যতম সেরা স্বাস্থ‌্য ও চি‌কিৎসা সাম‌য়িকী ল‌্যান‌সেট প‌ত্রিকায় গণস্বাস্থ্যের ম‌ডে‌ল সম্প‌র্কে এক‌টি প্রতি‌বেদন প্রকা‌শিত হ‌য়ে‌ছিল।
`দ‌রিদ্র মানু‌ষের ম‌ধ্যে বিনা মূ‌ল্যে বা স্বল্প মূ‌ল্যে স্বাস্থ‌্যসেবা প্রদান`- এই  দর্শনই ছিল গণস্বাস্থ্যের মূল‌ভি‌ত্তি। আর এই দর্শ‌নের উপর ভি‌ত্তি ক‌রেই নগরবাসী‌দের চিকিৎসার সু‌বিধা‌র্থে সাভা‌রে গণস্বাস্থ‌্য হাসপাত প্রতিষ্ঠার পর পরই ডা. জাফরুল্লাহ  ঢাকার ধানম‌ন্ডির ৬ নম্বর সড়ক এলাকায় গণস্বাস্থ‌্য নগর হাসপাতাল স্থাপন ক‌রেন। শুরু থে‌কে এখন পর্যন্ত ঢাকার এই হাসপাতা‌লে রোগীরা বিনা ভোগা‌ন্তি‌তে স্বল্পমূ‌ল্যে স্বাস্থ‌্যসেবা পে‌য়ে চল‌ছে। ঢাকার অন‌্যান‌্য হাসপাতাল বা  ক্লি‌নি‌কের চে‌য়ে গণস্বাস্থ‌্য নগর হাসপাতা‌লের  চি‌কিৎসা ব‌্যয় অ‌নেক কম। নিম্ন‌বিত্ত ও মধ‌্যবিত্তের লোকারা এখা‌নে কোন ঝা‌মেলা ছাড়া তুলনামুলক কম মূ‌ল্যে চি‌কিৎসা নি‌তে পা‌রেন। যেমন এখা‌নে সন্তান প্রস‌বের জন‌্য মোট খরচ হয় মাত্র দুই হাজার টাকা। য‌দি সিজা‌রিয়ান পদ্ধ‌তি‌তে  করা হয় তাহ‌লে মোট টাকা লা‌গে ১২ থে‌কে ১৪ হাজার। ডাক্তার, ঔষধ, প‌্যাথল‌জিক‌্যাল পরীক্ষা ও সিট ভাড়ার জন‌্য বাড়‌তি কো‌নো খরচ নেই। এছাড়া জ‌টিলতা সৃ‌ষ্টি না হ‌লে সিজার করা হয় না। কিন্তু ঢাকার অন‌্যান‌্য হাসপাতাল বা ক্লি‌নিকগু‌লো‌তে সাধারণ প্রসব নেই বল‌লেই চ‌লে। গণস্বাস্থ‌্য কেন্দ্র ছাড়া হাসপাতাল ভে‌দে সিজা‌রিয়ানের প‌্যা‌কেজ সর্ব‌নিম্ন ৬০ হাজার থে‌কে ২ বা ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধা‌রিত হয়। গণস্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রের সকল প‌্যাথল‌জি‌কেল পরীক্ষা সর্বাধু‌নিক ও সুলভ। এখা‌নে সকল রকম প‌্যাথল‌জিক‌্যাল পরীক্ষা খরচ হয় ঢাকার মাঝা‌রি মা‌নের হাসপাতাল বা ক্লি‌নি‌কের চে‌য়ে অ‌র্ধে‌কেরও কম।
৯০ দশ‌কের শে‌ষের দি‌কে ডা.জাফরুল্লাহর উ‌দ্যো‌গে ধানমন্ডির  গণস্বাস্থ‌্য নগর হাসপাতা‌লে ১০০ শয‌্যার এক‌টি সর্বাধু‌নিক কিড‌নি ডায়ালাই‌সিস সেন্টার  গ‌ড়ে তোল হয়। ভার‌তেও এত বড় কিড‌নি ডায়ালাই‌সিস সেন্টার নেই। এটাই দ‌ক্ষিণ এ‌শিয়ার সব‌চে‌য়ে বড় এবং উন্নত যে‌কো‌নো দে‌শের স‌ঙ্গে তুলনীয় কিড‌নি ডায়ালাই‌সিস সেন্টার। খরচ অ‌বিশ্বাস‌্য রক‌মের কম।
বর্তমা‌নে আমা‌দের দে‌শে কিড‌নি ডায়ালাই‌সি‌সের খরচ হয় ৭ থে‌কে ৮ হাজার টাকা। কো‌নো কো‌নো ক্ষে‌ত্রে ডাক্তার-ঔষধ এবং সিটভাড়া মি‌লি‌য়ে আরও বে‌শি প‌ড়ে যায়। কিন্তু গণস্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রে এক‌টি কিড‌নি রোগীর কাছ  থে‌কে ডায়ালাই‌সিস চার্জ তুনলামূলক অ‌নেক কম নেওয়া হয়। বর্তমা‌নে গণস্বাস্থ‌্য কেন্দ্র প্রতি‌দিন কমপ‌ক্ষে ২৫০ জন কিড‌নি‌  রোগীর ডায়ালাই‌সিস ক‌রে থা‌কে। এর ম‌ধ্যে ১০-১২ শত‌াংশ দ‌রিদ্র রোগীর ডায়ালাই‌সিস করা হয় সম্পূর্ণ বিনামূ‌ল্যে।  আর্থিক সামর্থ‌্য বি‌বেচনায় ২০ শতাংশ রোগী থে‌কে নেওয়া হয় ৮০০ টাকা। ১১০০ টাকা নেওয়া হয় ১৫ শতাংশ রোগী থে‌কে। স‌বোর্চ্চ নেওয়া হয় ২৫০০ টাকা। ত‌বে ২৫০০ টাকা দি‌য়ে যারা ডায়ালাই‌সিস কর‌তে পা‌রেন, তারা গণস্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রে আ‌সেন না। তারা অন‌্য নামকরা হাসপাতালে ৮ বা ১০ হাজার টাকা খরচ ক‌রে ডায়ালাই‌সিস করান। য‌দিও অন‌্য কোথাও গণস্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রের ম‌তো সেবা পাওয়া যায় না। এখা‌নে কিড‌নি রোগীর অন‌্য যে‌কোন রো‌গের ডাক্তা‌রি সেবা দেওয়া হয়। চি‌কিৎসক ও নার্স‌দের সেবার জন‌্য আলাদা কো‌নো ফি নেওয়া হয় না।
ঢাকার গণস্বাস্থ‌্য নগর হাসপাতাল‌  নাম‌টির সা‌থে আমার প‌রিচয় ঘ‌টে ২০০০ সা‌লের দি‌কে। ওই সময় আ‌মি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সদর হাসপাতাল রোড এলাকায় ঔষ‌ধের ব‌্যবসা করতাম। সময়টা ছিল গ্রীস্মকাল। চার‌দি‌কে প্রচন্ড গরম। ভ‌্যাপসা গর‌মে আ‌মি ভিষণ অসুস্থ হ‌য়ে প‌রি। পাশাপা‌শি শুরু হয় প্রচন্ড জ্বর-বুক ব‌্যাথা ও কাঁ‌শি।  এমতাবস্থায় চি‌কিসার জন‌্য বি‌ভিন্ন ডাক্তার‌দের নিকট ছ‌ুটাছু‌টি কর‌তে থা‌কি। কিন্তু কেউই স‌ঠিক চিকিৎসা দি‌তে পার‌চ্ছিল না। কেউ ব‌লছে-টাইফ‌য়েড, কেউ বল‌ছে-যক্ষ্ণা, কেউ ব‌লছে-ক‌্যান্সার ! আমার তখন পাগল  হওয়ার মত অবস্থা। ওই সময় আমার পূর্ব প‌রি‌চিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃ‌তিসন্তান বি‌শিষ্ট চি‌কিৎসক ডা. ফ‌রিদ আহ‌মদের পরামর্শম‌তো ঢাকার গণস্বাস্থ‌্য নগর হাসপাতা‌লে গি‌য়ে ভ‌র্তি হই এবং বি‌শিষ্ট মে‌ডি‌সিন বি‌শেষজ্ঞ অধ‌্যাপক মোহাম্মদ মু‌জিবুল হ‌কের তত্ত্ববধা‌নে আমার চি‌কিৎসা শুরু হয়। পাশাপা‌শি চ‌লে বি‌ভিন্ন ধর‌নের প‌্যাথল‌জি পরীক্ষা। মু‌জিবুল হক সা‌হেব এখ‌নো গণস্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রের সা‌থে জ‌ড়িত র‌য়ে‌ছেন। এখা‌নে আমার চি‌কিৎসা চ‌লে এক নাগাত ১৫ দিন পর্যন্ত। ত‌বে ৪-৫ দিন পর থে‌কে আ‌মি সুস্থ‌বোধ কর‌তে থা‌কি। কিন্তু জান‌তে পার‌ছি না আমার কি রোগ হ‌য়ে‌ছে? গণস্বাস্থ‌্যকে‌ন্দ্রে চি‌কিৎসাধীন অবস্থায় এক‌দিন সকাল‌দি‌কে হাসপাতাল  ক‌্যা‌ন্টি‌নে নাস্তা কর‌ছিলাম। এমন সময় লক্ষ‌্য করলাম, আমার সাম‌নের টে‌বি‌লে ব‌সে অ‌তি সাধারণ পোশা‌কে ডা.জাফরুল্লাহ হো‌টেল ব‌য়ের সা‌থে নাস্তা কর‌ছেন! এ‌দি‌কে কা‌রো ভ্রুক্ষেপ নেই! সবাই যার যার নাস্তা কর‌ছেন। উ‌ল্লেখ‌্য, গণস্বাস্থ‌্য নগর হাসপাতা‌লের ক‌্যা‌ন্টি‌নে সব সময় ফ্রেশ খাবার বি‌ক্রি হয় এবং দামও অন‌্যান‌্য হো‌টেল চে‌য়ে অ‌নেক কম। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই একই সা‌থে খাবার খান। এ‌ক্ষে‌ত্রে কো‌নো ভেদা‌ভেদ নেই। নাস্তা সম্পন্ন হওয়ার পর আ‌মি ডা. জাফরুল্লাহর কা‌ছে গি‌য়ে ব‌সি ও  আমার যাবতীয় সমস‌্যার কথা তা‌কে ব‌লি। তি‌নি আমার বর্ণনা শু‌নে বল‌লেন, আপনার নি‌মো‌নিয়া হ‌য়ে‌ছে, অন‌্য কো‌নো জ‌টিল বা  ক‌ঠিন রোগ নেই। আপ‌নি দ্রুত সুস্থ হ‌য়ে যা‌বেন। হতাশ হ‌বেন না। তার কথা শু‌নে আ‌মি বেশ আশ্বস্ত হলাম। আ‌রো তিন দিন পর অথার্ৎ দশম দিনে আ‌মি চি‌কিৎসা বো‌র্ডের মাধ‌্যমে অবগত হলাম, আমার নি‌মো‌নিয়া হ‌য়ে‌ছে। বি‌স্মিত হলাম ডা. জাফরুল্লাহ অ‌ভিজ্ঞতা ও আন্ত‌রিকতা দে‌খে। যেই রোগ সম্পর্কে ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া শহ‌রের বাঘা বাঘা ডাক্তারা  কিছুই বুঝ‌তে পার‌লেন না, সেটা ডা. জাফরুল্লাহ কো‌নো প‌্যাথল‌জিক‌্যাল রি‌র্পোট না দে‌খে  শুধু আমার মু‌খের কথা শু‌নেই স‌ঠিক রোগ নির্ণয় ক‌রে ফেল‌লেন!! এমন ডাক্তার য‌দি আমা‌দের দে‌শের সর্বত্র থাক‌তো, তাহ‌লে ভুক্ত‌ভোগী রোগী‌দের কতইনা সু‌বিধা হ‌তো।
ঢাকার গণস্বাস্থ‌্য নগর হাসপাতা‌লের তিন‌টি বিষয় আমা‌কে বেশ মুগ্ধ ক‌রে‌ছে।  প্রথম‌টি হ‌লো-এখা‌নে কো‌নো ওয়ার্ডবয় নেই। ডাক্তার ও নার্স মি‌লিতভা‌বে রোগীর সেবা ক‌রেন এবং সব সময় রোগীর খেয়াল রা‌খেন। হাসপাতা‌লে ভ‌র্তির সময় প্রতি‌টি রোগী‌কে আ‌র্থিক সামর্থ‌্য বি‌বেচনায় তিন‌টি শ্রেণি‌তে বিভক্ত করা হয় এবং সেই অনুযায়ী তা‌দের কাছ থে‌কে চার্জ নেওয়া হয়। ত‌বে সেবা  ও ঔষধ একই ধর‌নের দেওয়া হয়। দ্বিতীয়‌টি হ‌লো-গণস্বা‌স্থ্যের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অপ‌রকে ভাই ব‌লে স‌ম্বোধন ক‌রেন যেন, সবাই একই প‌রিবা‌রের সদস‌্য। সেই সুবা‌দে গণস্বা‌স্থ্যের সবাই ডা. জাফরুল্লাহ‌কে বড় ভাই ব‌লে ডাক‌তেন। স‌ত্যিই তি‌নি সবার বড় ভাই হি‌সে‌বেই র‌য়ে র‌গে‌লেন, স‌্যার হি‌সে‌বে নয়। তৃতীয়‌টি হ‌লো-ধূমপায়ী, আত্মঅহংকারী ও লোভী ব‌্যক্তিরা এই প্রতিষ্ঠা‌নে কখ‌নো নি‌য়োগ পান না। গণস্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রে চাক‌রি কর‌তে হ‌লে অবশ‌্যই সবাই‌কে অধূমপায়ী, নি‌র্লোভ ও নিষ্ঠাবান হ‌তে হ‌বে।
গণস্বাস্থ‌্য নগর হাসপাতা‌লে বর্তমা‌নে জেনা‌রেল সার্জারী, অ‌র্থো-সার্জারী, গাইনী সার্জারী, ইউ‌রো-সার্জারী, চর্ম‌রোগ, মান‌সিক রোগ, শিশু রোগ, নাক-কান-গলা, চক্ষু সহ আ‌রো বি‌ভিন্ন রো‌গের চি‌কিৎসা করা হয়। এখা‌নে জেনা‌রেল ওয়ার্ড, ম‌হিলা ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড সহ আই‌সিও এবং সি‌সিওর ব‌্যবস্থা আ‌ছে।
আমা‌দের দে‌শের প্রতি‌টি জেলা ও উপ‌জেলায়  য‌দি গণস্বা‌স্থ্যের ম‌তো স্বল্প মূ‌ল্যে স্বাস্থ‌্যসেবা চালু করা যে‌তো, তাহ‌লে সাধারণ মানুষ যথাযথ চি‌কিৎসা পে‌তো ও নানাধরনের ভোগান্তি থে‌কে রক্ষা পে‌তো। বস্তুত, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সব সময় এম‌নি স্বাস্থ‌্যব‌্যবস্থার স্বপ্ন দেখ‌তেন। আজীবন তি‌নি এটা বাস্তবায়ন করার জন‌্য লড়াই ক‌রে গে‌ছেন।(চল‌বে)।
খ‌ায়রুল আকরাম খান
ব‌্যু‌রো চীফ : deshdorshon.com

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

মব জা‌স্টিস : প্রেক্ষিত বাংলা‌দেশ

সন্ত্রাসী ও হত্যা মামলার আসামী…

১৬ বছরের অপকর্ম ধামাচাপা দিতেই…