বর্তমানে ৬১ টি তালিকাভুক্ত ও ৫ টি অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংক নিয়ে এদেশের ব্যাংক ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ৬ টি রাষ্ট্রয়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৩ টি বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৪২ টি ব্যক্তিমালিকাধীন ব্যাণিজ্যিক ব্যাংক ও ৯ টি বিদেশী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ জানুয়ারি শেষে এসব ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ৫ লাখ। পুরো জানুয়ারিতে দৈনিক লেন-দেন হয়েছে ১ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা। এর সঙ্গে নগদের লেনদেনের তথ্য যুক্ত করলে(মোবাইল ব্যাংকিং) সেবার আওতায় দৈনিক লেন-দেনের পরিমান বেড়ে দাড়াবে প্রায় ২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা! এখন প্রঙ্গগক্রমে প্রশ্ন আসে-ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকা ঘাটতি থাকলে কি এধরনের লেন-দেন সম্ভব হতো? বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং খাতে আমানতের মোট পরিমান ছিল ১৬ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এই আমানত গত নভেম্বর মাসের ২৪ ও ১৭ তারিখে ছিল যথাক্রমে ১৬ লাখ ৩১ হাজার ও ১৬ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে গত সপ্তাহে ব্যাংকের আমানত বেড়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। যদি ব্যাংকে মূলধনের ঘাটতি থাকতো এবং নগদ টাকার অভাব হতো, তাহলে কি মোট আমানতের টাকা এভাবে বৃদ্ধি পেতো?
প্রতি দিন ব্যাংক আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যেমন-অ্যাকাউন্ট খোলা, নিরাপত্তাসহ টাকার গোপনীয়তা রক্ষা করা, টাকা জমা-উত্তোলন, রেমিট্যান্স গ্রহন, বিল প্রদান, পে-অডার প্রদান, বিভিন্ন ভাতা প্রদান, মাসিক বেতন প্রদান, বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে টাকা পাঠানো, বিল প্রদান, এলসি খোলা ইত্যাদি। এক কথায় বলা যেতে পারে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার ক্ষেত্রে ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম। তবে এর মধ্যে কিছু কিছু ব্যাংক ঋণ খালাপির কারণে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে গেছে। হিসাব খোলার সময় বা লেন-দেন করার সময় দুর্বল ব্যাংকগুলোর ব্যাপারটি আমানতকারীর মাথায় রাখা উচিত।
উল্লেখ্য, শ্রেণিকৃত ঋণের মাত্রা, মূলধনের পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত ও নিরাপত্তা সঞ্চিতির পরিমান-এই চারটি দিক বিবেচনায় নিয়ে ১০ টি দুর্বল ব্যাংক চিহিৃত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো-বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি-ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান,এবি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্ণর আব্দুল রউফ তালুকদার চলিত বছরের আগস্ট মাস থেকে চিহিৃত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তাদের সমস্যা সমাধানকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংক ওয়ান-টু-ওয়ান ভিত্তিতে আলোচনা কার্যক্রম শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে একটি তিন বছর মেয়াদি বিজনেস প্লান প্রদান করা হবে। আশা করা যাচ্ছে এরই মধ্যে দুর্বল ব্যাংকগুলো ক্রমঅগ্রগতি লাভ করবে। এতে আমানতকারীর শংকা ও ভয় দূর হবে। (চলবে)
লেখক: খায়রুল আকরাম খান
ব্যুরো চীফ: দেশ দর্শন
Some text
ক্যাটাগরি: Uncategorized