বৃহস্পতিবার বিকাল ৩:১২, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলাম তরবা‌রির জো‌রে প্রতি‌ষ্ঠিত হয়‌নি: আলেমদের সঙ্গে মোকতা‌দির চৌধুরী

পাতানো বন্দুকযুদ্ধ: খুনি কৃষ্ণপদ রায়ের আমলনামা

১১৯ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় বসার পর অসংখ্য বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এসব বন্দুকযুদ্ধ যে পুলিশের পাতানো অনেকেই সেটা জানে না। আজ একটি পাতানো বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করবো। এ বন্দুকযুদ্ধের নাট্যকার ছিলেন তৎকালীন ডিএমপি (দক্ষিণ) ডেপুটি কমিশনার (গোয়েন্দা) কৃষ্ণপদ রায়।

এক:

‘আমার ছেলে কী দোষ করেছে? ওকে কেন মারা হলো? আমাদের বাঁচিয়ে রেখে কি লাভ? আমাদেরও মেরে ফেলেন। আল্লাহ ওদের বিচার করবে। ’ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ছেলের লাশ নিতে এসে এভাবে আর্তনাদ করছিলেন ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনির মা নিলুফার পারভীন।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ডিবির সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গুলিবিদ্ধ হন জনি। এরপর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জনিকে মৃত ঘোষণা করেন।

জনির ফুফাতো ভাই শহীদুল ইসলামের দেয়া তথ্যমতে, জনি হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজে পড়তেন। তিনি খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বছর খানেক আগে জনি বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী মুনিরা পারভীন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

শহীদুল ইসলামের ভাষ্য, গাড়ি পোড়ানোর মামলায় আটক ছোট ভাই মনিরুজ্জামানের সাথে দেখা করতে গতকাল দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান জনি। এ সময় তার সাথে আরো দুজন ছিলেন। বেলা একটার দিকে মুঠোফোনে জনির সাথে পরিবারের সর্বশেষ কথা হয়। এরপর থেকে জনি নিখোঁজ ছিলেন। তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জনির সাথে থাকা ব্যক্তিদের নাম জানাতে পারেননি শহীদুল।

শহীদুলের দাবি, পুলিশের দেয়া গাড়ি পোড়ানো মামলা বাদে জনির নামে অন্য কোনো মামলা ছিলো না। মামলার পর থেকে প্রাণ ভয়ে স্বজনদের বাসায় পালিয়ে বেড়াতেন জনি। সূত্র: প্রথম আলো ২০ জানুয়ারি ২০১৫

দুই:

বন্দুকযুদ্ধের নাটকের পর ডিএমপি (দক্ষিণ) ডিবি ডেপুটি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, জনি ছাত্রদলের নেতা বলে জানা গেছে। রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে পুলিশের ওপর সর্বশেষ বোমা হামলার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। ডিবির (দক্ষিণ) দেয়া তথ্যমতে, গতকাল নাজিমউদ্দিন রোড থেকে ডিবি জনিকে আটক করে। এরপর রাত আড়াইটার দিকে তাকে নিয়ে খিলগাঁও জোড়পুকুর বালুর মাঠের প্রধান ফটক এলাকায় অভিযানে যায় ডিবি। এ সময় প্রতিপক্ষরা ডিবিকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়লে ডিবির সাথে তাদের ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

ডিবির দাবি, ‘বন্দুকযুদ্ধ’ চলাকালে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে নুরুজ্জামান গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, গুলি ও বেশ কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জনির শরীরে ১৫টি গুলির চিহ্ন রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান নিশোর উপস্থিতিতে মতিঝিল থানার এক এসআই সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ১-এর পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই মোজাম্মেল হক জানান, জনির লাশ কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে। সূত্র: প্রথম আলো ২০ জানুয়ারি ২০১৫

তিন:

নুরুজ্জামান জনির বিরুদ্ধে গাড়ি পোড়ানোর মামলা ছাড়া অন্য কোনো মামলা ছিলো না। এটা সবাই জানে যে, গাড়ী পোড়ানোর মামলাগুলো সবই রাজনৈতিক মামলা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা কালে এ ধরণের হাজার হাজার গায়েবি মামলা দিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ নিরীহ মানুষদের ফাঁসানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের গুন্ডা-পান্ডারা গাড়ী পোড়াতো। মামলা দিতো বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের নামে। এসব গায়েবি মামলা দিয়ে দলবাজ পুলিশ অফিসাররা একদিকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অপশাসনকে দীর্ঘায়িত করেছে। অন্যদিকে এসব মামলায় গ্রেফতার বাণিজ্য করে শত শত টাকা আয় করে পুলিশ প্রশাসনে দৃর্বৃত্তায়ন কায়েম করেছিলো।

চার:

৮ বছর পর এ নির্মম ও নৃশংস হত্যাকান্ডের অভিযোগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ পুলিশের ১৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়।

২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে জনির বাবা মো. ইয়াকুব আলী বাদী হয়ে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৫ (২) ধারায় এ আবেদন করেন।

বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশ পরে দিবেন বলে জানান আদালত। বাদীর আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার এ তথ্য জানিয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলেন: ডিএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, ডিবির ডেপুটি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, ডিবির রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত, মো. জাহিদুল হক তালুকদার, ডিবি রমনা জোনের এসআই দীপক কুমার দাস, ডিবির ইন্সপেক্টর ফজলুর রহমান, ওহিদুজ্জামান, এসএম শাহরিয়ার হাসান, ডিবির এসআই শিহাব উদ্দিন, বাহাউদ্দিন ফারুকী, মো. জাহাঙ্গির হোসেন, ডিবির কনস্টেবল মো. সোলাইমান, আবু সায়েদ, মো. লুৎফর রহমান, খিলগাঁও থানার এসআই মো. আলাউদ্দিন। চ্যানেল-২৪, সোমবার ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।

পরে এ মামলা খারিজ করে দেন বিচারক। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল জানান, এ দিন আদালতে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত। পরে মামলা গ্রহণের উপাদান না থাকায় আদালত তা খারিজ করে দেন। সূত্র: দৈনিক বাংলা, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।

পাঁচ:

বিগত ১৬ বছর দেশের বিচার ব্যবস্থা কেমন ছিলো সেটা কমবেশি সবাই জানে। এ নিয়ে আলোচনা করে সময় নষ্ট করার কোনো মানে নেই। জনির খুনের মামলা খারিজ করে দিয়েছিলো আদালত।

নুরুজ্জামান জনির নির্মম-নৃশংস হত্যাকান্ডের মূল মাস্টারমাইন্ড কৃষ্ণপদ রায়কে ইতিমধ্যে পুলিশ বিভাগ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে ইতিপূর্বে অপসারণ করা হয়েছে। শুধু অপসারণই শাস্তি নয়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক ও অস্ত্রশস্ত্র জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা হয়। পোশাকপরা কিছু আওয়ামী দুর্বৃত্ত পুলিশ প্রশাসনে রাজা হয়ে বসেছিলো। তারা কোনো কিছুকেই পরোয়া করেনি। কারণ তাদের পিছনে মূল শক্তি ছিলো মাফিয়া রানী হাসিনা। এসব দুর্বৃত্তরা ভুলেই গিয়েছিলো তাদের কৃতকর্মের ফল একদিন না একদিন ভোগ করতেই হবে।

ছয়:

ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক বিচার ব্যবস্থা কায়েমের জন্য বিচারকের পোশাকপরা আওয়ামী সমর্থক ড্রেনের কীট, পতঙ্গ ও ভাইরাসগুলোতে দ্রুত সরানো দরকার। দলবাজরা পদে বহাল থাকলে তাদের ভাইরাসে অন্যান্য সৎ, যোগ্য ও মেধাবীরা দুষিত হবে। শূণ্যস্থানে নতুন নিয়োগ দিয়ে সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের মূল্যায়নের এখনই সময়।

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

মব জা‌স্টিস : প্রেক্ষিত বাংলা‌দেশ

সন্ত্রাসী ও হত্যা মামলার আসামী…

১৬ বছরের অপকর্ম ধামাচাপা দিতেই…