বৃহস্পতিবার রাত ১:১৫, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলাম তরবা‌রির জো‌রে প্রতি‌ষ্ঠিত হয়‌নি: আলেমদের সঙ্গে মোকতা‌দির চৌধুরী

কবিতা: ছুটিতে বাড়িতে

জুনায়েদ গালিব

মনের ফিল্টারটি বড্ডো জেদি, হাল ছাড়বার নয়, তাই 'বাসায় থেকেই আমি ছুটিতে বাড়িতে বেড়িয়ে আসি।'

 

আমার বাসার মস্ত উঠোন,

সামনে কামিনী গাছ, পিছনে ফুলেল ঔষধি কাঞ্চন।

আরো আছে বড় বড় ওক গাছ,

সীমানা ঘিরে লম্বা গাছ- বারোটি রয়াল পাম।

ছায়াঘেরা উঠোন, ছুটির দিনে প্রচণ্ড গরমেও বাইরেই বসি

সারাদিন বাতাস আর পাতার ঝিরঝির গান,

কাঠবিড়ালি, পাখি, প্রজাপতি, এদের কোলাহল।

 

প্রায়ই হাঁসের দল আসে, কিছুক্ষণ পোকা-মাকড়

ঘাসের বীজ খায়, হাঁসেরা সুশৃঙ্খলভাবে মাটির

প্রতিটি ইঞ্চি ঠোঁট দিয়ে চেঁছে খায়,

এই হাঁসেরা প্যাকপ্যাক আওয়াজ করে না,

কাদা-পানির শামুক এরা পায় না।

আশেপাশে শুধুই বাসা, অনুমোদিত শুধুই বাসিন্দারা,

তাই আওয়াজ খুব কম,

রিকশা-সাইকেলের টুংটাং নেই,

ফেরিওয়ালার হাঁকডাক নেই,

নীরবতা পুরোদমে।

 

বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী নিয়ে প্রায়ই জমায়েত করি,

তারা বলে বাসাটা খুব সুন্দর, অনেক রকম ফুল ফোঁটে।

বেশিরভাগই ভেতরে এসির আড্ডা পছন্দ করে,

আমি সুযোগ পেলেই বাইরে বসি, তাদেরকেও নিয়ে আসি।

আমার অর্ধাঙ্গিনী বলেন, গরমের মধ্যে-

মেহমান নিয়ে বাইরে কেন?

বাচ্চারা গরমে অস্থির হয়ে যাবে, খেয়াল রাখি,

তাড়াতাড়ি ভেতরে নিয়ে আসি যেন।

 

সবাই যা দেখে আমার উঠোনে, আমিও তাই দেখি,

ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বারবার দেখি,

বাসার অফিস-রুমের জানালা দিয়ে পুরো উঠোন দেখি,

কিন্তু আমার মস্তিষ্ক সবকিছু ফিল্টার করে,

অসহ্য এক দানবের মতো আমার চোখের দরজায়-

দাঁড়িয়ে সব দৃশ্য ছাঁকে,

ছেঁকে ছেঁকে আমি সেই আবার উঠানই দেখি।

আমার বাসার উঠোনে আমি কখনো আমার অন্তর রাখিনি

আমার শৈশবের দক্ষিণপাড়ের অসংখ্য নারিকেল গাছ দেখি,

উত্তরপাড়ের একেকটা কুকুর-ছানাগুলোর বৈচিত্র্য দেখি

সাইকেল চালিয়ে যাওয়া ইমাম সাহেবের হাসিমুখ দেখি,

আমি তাকে কখনো রাগতে দেখিনি।

 

এতো নীরবতার মাঝে বাঁধাহীন আমি দিন গুণি,

আয়েশ করে আমি আমার পাড়ার আওয়াজ শুনি,

ফেরিওয়ালার অদৃশ্য হাঁকডাক শুনে নিজেই হাসি।

বাসায় থেকে নিজের সাথে বাড়ির গল্প করি,

ছুটিগুলো জমিয়ে বাসা রেখে একটু বাড়িতে যাবো ভাবি।

 

সম্পর্কগুলো আন্তরিকতায় ভরা, দুই যুগেও নতুন রয়ে গেলো

আমার দানবীয় ফিল্টার কিছুতেই ছাড়ে না,

ছেলেবেলার দুইদিনের সাথী ও বেশিদিনের আপন হয়ে রইলো।

 

বছরে বায়ান্ন দিন সপ্তাহান্তের ছুটিতে বাসায়ই থাকা হয়,

বারো দিনের মতো সরকারি ছুটি,

আরো আছে অফিসের কাছে ২১ দিনের পাওনা ছুটি।

কোথাও তেমন যাওয়া হয় না, বাড়ি থেকে ডাক আসে যদি

মনের ফিল্টারটি বড্ডো জেদি, হাল ছাড়বার নয়,

তাই বাসায় থেকেই আমি ছুটিতে বাড়িতে বেড়িয়ে আসি।

 

জুনায়েদ গালিব :: ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র

ক্যাটাগরি: মিনি কলাম,  শীর্ষ তিন,  সারাদেশ

ট্যাগ:

Leave a Reply