ডলার হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি মুদ্রার নাম। এর এক শতাংশ নাম সেন্ট। ১ ডলার ১০০ সেন্ট এর সমতুল্য। মার্কিন কংগ্রেস ১৭৮৫ সালে এটি প্রবর্তন করে। দ্বিতীয় মাহাযুদ্ধের সময় থেকেই বিশ্ব মুদ্রা বাজারে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ `হার্ড কারেন্সী` হিসেবে পরিগনিত। এর একাধিক নাম রয়েছে। যেমন-বাক, বিন, পেপার, ডেড প্রেসিডেন্ট ইত্যাদি। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মুদ্রায় ০.৮৭ পয়সা সমান ১ সেন্ট ছিলো। মার্কিন ডলার বর্তমানে বিশ্বের সর্বাধিক প্রচলিত মুদ্রা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আরও কিছু দেশ এই ডলাকে সরকারি মুদ্রা হিসেবে করে। মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক মূদ্রার ব্যবহার দুই ধরনের প্রথমত এটি আন্তর্জাতিক দেনা-পাওনা মেটানোর মুদ্রা। দ্বিতীয়ত এটি বহুল প্রচলিত একটি রিজার্ভ কারেন্সী। বিশ্ব ব্যাংকের ১৯৯৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাজারে ৩৮০ বিলিয়ন(৩৮ হাজার কোটি) ডলার চালু আছে, যার দুই তৃতীয়াংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে চালু। ২০০৫ সাল নাগাদ এর পরিমান ৭৬০ বিলিয়নে (৭৬ হাজার কোটি ) পৌঁছেছে। আর এর অর্ধেকই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে।
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ বছরের মধ্যে মার্কিন ডলারের মান ও মূল্য চলিত ২০২১-২২ সালের অর্থ বছরেই সবচেয়ে বেশি হয়েছে। বর্তমানে মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের মান কমেছে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, ব্রিটিশ পাউন্ড ও ইউরোর দাম কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ,সুইস ফ্রাঙ্ককের মান কমেছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ আর চীনের মুদ্রা ইউয়ানের অবমূল্যান ঘটেছে সাড়ে ৩ শতাংশ।
ডলার চাঙ্গা থাকায় যেসব দেশ জ্বালানি তেল, খাদ্য ও ভোগ্যপণ্য এবং ধাতব পণ্য রপ্তানি করছে তারা অত্যন্ত ভালো অবস্থানে আছে। তাদের আয় বাড়ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের মতো আমদানি নির্ভর দরিদ্র দেশগুলো ভিষণ বিপদে পড়েছে। সবারই আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। ফলে দেশগুলো বিদেশ থেকে মূল্যস্ফীতিও আমদানি করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে একদিকে বিশ্ববাজারে প্রায় সব পণ্যের আমদানি মুল্য বেড়ে গেছে, আবার সুদের হার বাড়ায় অন্য দেশগুলো থেকে নিরাপদ বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে পুঁজি ঢুকছে যুক্তরাস্ট্রে। এই দুইয়ের প্রভাবে বাংলাদেশ সহ প্রায় সব দেশই নিজেদের মুদ্রাকে অবমূল্যায়ন করতে বাধ্য হচ্ছে।
মূলত আন্তর্জাতিক লেনদেনের বিনিময়ের মাধ্যমে হিসেবে কম উন্নত বা গরিব দেশগুলোর মুদ্রার গুরুত্ব তেমন নেই। এমতাবস্থায় দরিদ্র দেশগুলো দৈনন্দিন বিনিময় হার ঠিক করার জন্য আন্তর্জাতিক কোনো এক মুদ্রাকে মধ্যর্বতী মুদ্রা বা কারেন্সি হিসেবে গ্রহণ করে। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মুদ্রার ক্ষেত্রে এখন মধ্যবর্তী মুদ্রা হচ্ছে মাকির্ন ডলার।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৩২ বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান কমেছে ৮৭ শতাংশ। আর এখন সেই ডলারের মূল্যমান ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা।অথার্ৎ পরের ১৮ বছরে টাকার মান কমেছে আরও ৩২ শতাংশ। এর অর্থ ডলার ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে, কিন্তু টাকা সেভাবে শক্তিশালী হতে পারেনি। ফলে এখনো টাকার মান ধরে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। চলিত বছরেই পাঁচ থেকে ছয় বার অবমূল্যায়ন করতে হয়েছে টাকাকে।
উল্লেখ্য,গত বছর আগস্টে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৪০ পয়সা কমানো হয়। এরপর আন্তঃব্যাংক বিনিময় হারে সেপ্টেম্বরে এসে ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও ৩০ পয়সা, অক্টোবরে ১৭ পয়সা, নভেম্বরে ১৩ পয়সা কমায় বংলাদেশ ব্যাংক। আর চলিত ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক আবারও টাকার মান ২০ পয়সা কমিয়ে প্রতি ডলারের মূল্য ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করে। ফেব্রুয়ারিতে টাকার মান আরও ২০ পয়সা কমিয়ে ডলারের মূল্য ৮৬ টাকায় নির্ধারণ করা হয়। এর পর থেকে ডলারের সংকট তীব্র হলে ধারাবাহিকভাবে ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও কমানো হয়। চলিত বছরের মে আবার ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও ১ টাকা ৪৫ পয়সা কমানো হয়। এরপর প্রতি ডলারের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা। জুন মাসে ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও ১ টাকা ৬০ পয়সা কমিয়ে ডলারের মূল্য ৯১ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয় এবং জুলাই মাসে আরও আশঙ্কাজনকভাবে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৩ টাকা ২০ পয়সা কমিয়ে ডলারের মূল্য ৯৩ টাকা ৮৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এতেই বোঝা যাচ্ছে, দেশে ডলারের খরা চলছে। এটি সহজেই কাটছে না। কিন্তু এই অস্থির অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বেধে দেওয়া এ রেট বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো মানছে না। এখন ব্যাংকে এলসি করতে গেলে ডলারের বিপরীতে নেওয়া হচ্ছে ৯৫ থেকে ৯৬ টাকা। আবার কোনো কোনো ব্যাংক ৯৭-৯৮ টাকাও নিচ্ছে। এছাড়া খোলাবাজারে বা কার্বমার্কেটে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০০ বা ১০০ টাকার ওপরে। এক কথায় বলা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেধে দেওয়া রেটের চেয়ে বাজারে বেশি দামে ডলার বিক্রি হচ্ছে। এধরনের লোভনীয় প্রবনতা সত্যিই দুঃখজনক এবং এটা কোনোভাবেই হওয়া উচিত নয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের করোনার ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্বের প্রায় সব বড় অর্থনীতি ২০২১ সালে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। অধিকাংশ বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থার পূর্বানুমান ছিল, ২০২২ সালে বিশ্ব অর্থনীতি কোভিডকে ভালোভাবে সামলে উঠবে। কিন্তু চলিত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যেন বাড়া ভাতে ছাই ঢেলে দিল। এর মধ্যে বিশ্বে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং যার প্রভাব বাংলাদেশে পড়ছে। বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি মানুষকে কঠিন বিপদে ফেলেছে। যা শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক জীবন চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। এই যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতির সূচক যেন আকাশ ছুঁয়েছে!
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির ভীতও নাড়িয়ে দিচ্ছে মার্কিন ডলার। ডলারের খরচ কমানো ও সরবরাহ বাড়াতে মরিয়া সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই নেওয়া হচ্ছে একের পর এক পদক্ষেপ। তারই অংশ হিসেবে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ। পাচার ঠেকাতে পণ্য স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ। শুরু হয়েছে কৃচ্ছ্রসাধন। পাশাপাশি বাড়তি ডলার আয় করতে রেমিট্যান্স আহরণে আনা হয়েছে শিথিলতা। বাড়ানো হয়ছে প্রণোদনা। আর বাজারে ডলার বাড়াতে রপ্তানিকারকদের হিসাবে ডলারের জমা রাখার কোটা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু এত সবের পরেও ডলারের অস্থিরতা কাটছে না। এই প্রেক্ষিতে অনেকেই বলছেন, সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে আছে। আইন মান্যতা যাদের কাজ তারাই আইন মানছেন না। আমলা থেকে ব্যবসায়ী সবাই ব্যক্তিগত মুনাফা নিয়ে মহাব্যস্ত, রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থ কেউ দেখছেন না। তাই এতা কিছুর পরও ডলারের দামে লাগা টানা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইড থেকে অবগত হওয়া যায়, ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১২ দিনেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রির্জাভ থেকে ৪৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে। ফলে রির্জাভ দুই বছর পর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। গত ১২ জুলাই দিন শেষে রির্জাভের পরিমান ছিল ৩৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। এখন প্রসঙ্গক্রমে প্রশ্ন আসে-এতো কিছুর পরও কেন ডলারের দাম বাড়ছে? কেন বাগে আসছে না ডলারের তেজী ভাব?
অভিজ্ঞমহলের মতে, দেশে একদিকে আমদানির চাপ বেড়েছে। তাই আমদানির দায় পরিশোধের জন্য বাড়তি ডলার লাগছে। এছাড়াও বিদেশে চিকিৎসা ও পড়াশুনা বাবদ নগদ ডলার ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু সেই তুলনায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়েনি। তাই ব্যাংক ব্যবস্থা ও খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ বাড়ছে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যার কারণে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম। সুতরাং বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ। কিন্তু তারপরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না ডলার। কিন্তু অনেক সময় ডলারের দাম বৃদ্ধি পেলে সাথে সাথে রপ্তানিও বৃদ্ধি পায়। কারণ দেশের রপ্তানিকারকরা তখন লোকাল মুদ্রায় বিনিময়কালে বেশি পরিমান টাকা পায়। কিন্তু এখন এই নীতি তেমন কাজ করছে না। এই অবস্থায় অবার অনেকেই মনে করছেন, কিছু অসৎ ব্যবসায়ী হয়তো অনেক ডলার মজুদ করে রেখেছে। তাই প্রতিদিন ডলারের দাম বাড়ছে। সুতরাং খোলাবাজারে যাতে কেউ ডলার মজুদ না করতে পারে সেইদিকে সজাগদৃষ্টি রাখতে হবে। আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে, দেশে পণ্য তৈরি করতে হবে। প্রয়োজন হলে সরকার ভর্তুকি দেবে। ফলে দেশের ফসল উৎপাদন বড়বে। কারণ বিশ্বে যে কোনো সময় খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। তাই পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রাখতে হবে। সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে যাতে দেশ কোনো অর্থনৈতিক সংকটে না পড়ে। আমাদের আমদানি ব্যয় থেকে রপ্তানি আয় বাদ দিলে বাণিজ্য ঘাটতি থাকে প্রায় ৪৯০ কোটি ডলার। তাই এই বাণিজ্য ঘাটতিও কমাতে হবে।
আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সমপরিমান বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ থাকতে হয়। এখন প্রসঙ্গক্রমে প্রশ্ন আসে-আমাদের নিকট কি সেই পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ আছে? কারণ বিভিন্ন কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রতিনিয়তই বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ কমে যাচ্ছে। গত ১৮ জুলাই বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত রির্পোট থেকে অবগত হওয়া যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভ বর্তমানে ৩৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ডলারের লাহাগহীন দামের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিনই নতুন নতুন নির্দেশনা জারি করে ডলারের সুরক্ষা বলয় তৈরির করছে। কিন্তু সব প্রচষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছে। গত ২১ জুলাই আবারও ডলারের দাম বৃদ্ধি পয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি বিক্রি করেছে ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা করে। বর্তমানে বাংলাদেশে সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল(আই এম এফ) এর দলীয় প্রধান রাহুল আনন্দ বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, সরকার যেভাবে হিসাব করে রির্জাভ ৩৯ বিলিয়ন ডলার মজুদ আছে বলে জানাচ্ছে, আসলে এর পুরোটা রির্জাভ নয়। তিনিসহ তার সফর সঙ্গীরা বলছেন, এটা ৩১-৩২ বিলিয়ন ডলার হতে পারে। যদি তাই হয়, তবে এটাই ভয়ের কারণ। সরকারের উচিত সত্যিকারভাবে অর্থের রির্জাভ কত তা জানানো। কারণ দেশে সংকট দেখা দেওয়ার আগেই আইএমএফ থেকে বাজেট সহায়তা সহ গঠনমূলক পরার্মশ পাওয়া যাবে। তবে সংকট শুরু হয়ে গেলে সহায়তা পাওয়া তখন কঠিন হবে এবং জনগণও কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য আগাম প্রস্তুতী নিতে পারবে না। দেশে তখন বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। সুতরাং তথ্যপ্রযুক্তির যুগে দেশের স্বার্থে কোনো তথ্যই লুকানোর যথাযথ কাজ নয়।
আমাদের অর্থনীতিতে মার্কিন ডলারের এমন অস্থিরতা মোটেই মঙ্গলজনক নয়। ডলার নিয়ে ভয়াবহ এই কারসাজির সাথে কিছু মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠান, কিছু সংখ্যক অসৎ ব্যবসায়ী ও বেশ কয়েকটি ব্যাংক জড়িত বলে ধারনা করা হচ্ছে। অভিযোগ-এসব অসৎব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ডলারের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। ব্যাংক ও কার্ব মার্কেট সংশ্লিষ্টরা অতিরিক্ত মুনাফা লুটার জন্য ডলারের দাম বাড়াচ্ছেন। এরা দেশের শত্রু ও জাতির শক্র। সুতরাং দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার বৃহত্তর স্বার্থে এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত হওয়া দরকার।
বৈদেশিক মুদ্রার মজুদকে চাপমুক্ত রাখতে হলে আসল প্রয়োজন হচ্ছে-রপ্তানি বৃদ্ধি করা, বিলাসবহুল পণ্য ও বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক ও ফল আমদানি নিরুসাহিত করা ও এই খাতে আমদানি কর বাড়িয়ে দেওয়া, অর্থপাচার রোধ, বড় বড় প্রকল্পের কাজ আপাতত স্থগিত করা, বিলাসীতা পরিহার করে কৃচ্ছসাধন, রেমিট্যান্স আহরনের গতিকে পড়তে না দেওয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হয় এরূপ ব্যয় যথা- অযথা বৈদেশিক ঋণ, বিদেশ ভ্রমণ, দেশে ও বিদেশে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ ইত্যাদি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন না করে পরিকল্পনাহীনভাবে বার বার টাকার অবমূল্যায়ন করা হলে সেটি উপকারের পরিবর্তে বাজারে বরং নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং এখনই জরুরি ভিত্তিতে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে এর প্রতিক্রিয়া ক্রমান্বয়ে দেশের পুরো অর্থনীতিই ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। এমনকি শ্রীলঙ্কার মতো আমাদের দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা ঘটতেও পারে!!
খায়রুল আকরাম খান
ব্যুরো চীফ, দেশ দর্শন
Some text
ক্যাটাগরি: Uncategorized