বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ১৯৭২ অনুসারে আইনজীবী ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির মামলা দায়ের/পরিচালনা করার সুযোগ নাই। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো মুহুরীরাই মক্কেলের কাছ থেকে প্রধানত মামলা গ্রহণ করে চলেছে! গত চার বছরে সিভিল কোর্টের একজন বিচারক থাকাকালীন সময়ে আমি নীচে উল্লেখিত চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছিলাম।
১. মুহুরী আদালতের অংশ নয়, শুনানীর সময় আদালতে মুহুরী থাকেন না। অথচ মামলার ফাইলিং, তদ্বির এমনকি আরজি, দরখাস্ত পর্যন্ত মুহুরীরা লিখছে, মানে যা মন চায় কোর্টে জমা দিচ্ছে। মুহুরী আইন জানা কেউ নয় তাই তার এসব বেআইনী কাজ তার মক্কেলের মামলা হারের মূল কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে। একশ্রেনীর আইনজীবী আরজি বা দরখাস্ত না পড়েই শুধু স্বাক্ষর করে কোর্টে শুনানি করতে চলে আসে। মামলার বিষয়ে কিছু জানতে চাইলে বলে মুহুরী জানে!
২. একেকদিন একেক আইনজীবী হাজিরা দিচ্ছে। কোনো ওকালতনামাও দিচ্ছে না। ধরা পড়লে বলছে অমুক আইনজীবী অসুস্থ থাকায় বা অনুপস্থিত থাকায় তার পক্ষে হাজিরা দিয়েছি!
৩. মামলায় হাজিরা দিয়ে আইনজীবী একবার ঘুরে যাবে মানে কোর্টকে দেখাবে তিনি ছিলেন, কিন্তু শুনানীর সময় গরহাজির থাকবেন। মক্কেলের ক্ষতি হবে ভেবে আইনজীবীকে খবর দিয়ে এনে শুনানি করতে হয়। এর অন্যতম কারন আইনজীবী যথাযথ ফি পান নাই, মূলত মুহুরী বেশীরভাগ ফি নিয়ে ফেলেছে।
৪. ২/৩ বছর ধরে সমন জারির তদ্বির এর জন্য পড়ে থাকলেও তদ্বির করে না। খারিজ করলে দিনশেষে বিচারপ্রার্থীর ক্ষতি। অথচ আইনজীবী নিজে মনিটরিং করলে এরকম হওয়ার কথা না। এর ফলে মামলার বিচারে অস্বাভাবিক সময় লাগছে।
এরকম আরো অনেক সমস্যা আছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের পক্ষে আইনানুগ লড়াই করতে চাওয়া বিজ্ঞ আইনজীবীদের এই ব্যাপারে করার আছে অনেক কিছু।
লেখক: মো. জুনাইদ
জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা
ক্যাটাগরি: শীর্ষ তিন, সারাদেশ
কোন কাজে সরকারী ফি এর ধার ধারেনা উনারা। সবকিছু চুকে দিয়ে দিতে হয়। এর পাশাপাশি কোর্টের কিছু অসাধু স্টাফরাও এদের বাধ্য করে এসব করায়।