সমস্ত ভূমিভিত্তিক উদ্ভিদের মতো সূর্যমূখীর মূলও মাটি থেকে পুষ্টি, জল এবং অন্যান্য খনিজগুলিকে টেনে বের করে অত্যন্ত দক্ষ প্রক্রিয়ায় তাদের ডালপালা এবং পাতায় সংরক্ষণ করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দস্তা, তামা এবং অন্যান্য তেজস্ক্রিয় উপাদান।
আপনি জানেন কি, সূর্যমুখী নিউক্লিয়ার রেডিয়েশন শোষণ করে? তাহলে আসুন জেনে নেই বিস্তারিত। হিরোশিমা, ফুকুশিমা এবং চেরনোবিল পারমাণবিক বিপর্যয়ের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাজুড়ে বিপুল পরিমাণে সূর্যমুখী চারা রোপণ করা হয়েছে। যেন মাটি থেকে বিষাক্ত ধাতু এবং বিকিরণ শোষণ করে পরিবেশ বাসযোগ্য করানো যায়। নতুন গবেষণায় এখন এটা প্রমাণিত যে সূর্যমুখী দেখতে যতটা সুন্দর, তার থেকেও পরিবেশের জন্যে এটা বেশি প্রয়োজনীয়।
সূর্যমুখী- যাকে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা “Hyperaccumulators– plants ” বলে। এ ধরনের উদ্ভিদের টিস্যুতে উচ্চঘনত্বের বিষাক্ত পদার্থ গ্রহণ করার ক্ষমতা রয়েছে। সমস্ত ভূমিভিত্তিক উদ্ভিদের মতো সূর্যমূখীর মূলও মাটি থেকে পুষ্টি, জল এবং অন্যান্য খনিজগুলিকে টেনে বের করে অত্যন্ত দক্ষ প্রক্রিয়ায় তাদের ডালপালা এবং পাতায় সংরক্ষণ করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দস্তা, তামা এবং অন্যান্য তেজস্ক্রিয় উপাদান।
সূর্যমুখীর শোষণ পক্রিয়াটি আধুনিক পরিবেশগত বিপর্যয় নিরাময়ে অত্যন্ত ধীরগতির। এরপরও পরিবেশদূষণ বন্ধ করতে বিভিন্ন ধরনের সূর্যমুখী জাতের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে ফুকোশিমায় সুনামি-পরবর্তী দূর্ঘটনায় পরিবেশ থেকে তেজস্ক্রিয়তা দূর করতে সূর্যমুখীর বাগান অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ফলাফল প্রদান করেছে ।
পারমাণবিক বিকিরণ শোষণ করার সবচেয়ে কার্যকর, অ-আক্রমণাত্মক উপায় হিসাবে সূর্যমুখীর ভূমিকা অনন্য। এ পক্রিয়ায় জাপানিরা তাদের নিউক্লিয়ার রেডিয়েন্স আক্রান্ত এলাকাগুলোকে দূষণমুক্ত করছে৷ পরিবেশ রক্ষায় সূর্যমুখীর এ অবদান এটাই প্রমাণ করে- প্রকৃতি নিজেই নিজের দেখাশোনা করার জন্যে যথেষ্ট।
সোহাগ মাহবুব হাসান
লেখক ও ইতিহাস গবেষক
ক্যাটাগরি: বিশেষ প্রতিবেদন, শীর্ষ তিন, সারাদেশ